আজ ২ নভেম্বর, রোববার রয়েল রিসোর্টে উৎসবমুখর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হলো “তারুণ্যের ভাবনায় কেমন বাংলাদেশ চাই” শীর্ষক অনুপ্রেরণামূলক আলোচনা সভা।
আয়োজন করে সমাজ উন্নয়ন ও মানবতার সেবায় নিবেদিত প্রতিষ্ঠান রেনেসাঁ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন রেনেসাঁ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মোঃ আতাউর রহমান, এবং সঞ্চালনায় ছিলেন পরিবেশ কন্ঠের প্রকাশক মীযানুর রহমান ও সোনারগাঁও জনকল্যাণ যুব সংস্থার সভাপতি ফয়সাল আহমেদ।
বাংলাদেশ— ইতিহাস, ঐতিহ্য, মুক্তিযুদ্ধ ও গৌরবের দেশ।
এই ঐতিহ্যকে ধারণ করে নতুন প্রজন্মের হৃদয়ে জেগে উঠেছে নতুন অঙ্গীকার—
“ঐতিহ্যের শিকড়ে দাঁড়িয়ে গড়বো এক আধুনিক, মানবিক ও টেকসই বাংলাদেশ।”
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাসসের চেয়ারম্যান আনোয়ার আলদীন,
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান রতন, এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আলমগীর হোসেন ও সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান। বাংলাদেশ তথ্য ও মানবাধিকার ফাউন্ডেশনের আঞ্চলিক সভাপতি মোঃ শামীম হোসেন।
প্রধান অতিথি আনোয়ার আলদীন তাঁর বক্তব্যে বলেন “বাংলাদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির অন্যতম কেন্দ্র এই অঞ্চল। সোনারগাঁ আমাদের গর্ব—যেখানে মসলিন, শিল্প, সংস্কৃতি ও লোকজ ঐতিহ্যের চিহ্ন এখনো বেঁচে আছে। শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশে নতুন করে আত্মবিশ্বাস, আত্মনির্ভরতা ও উন্নয়নের ধারা সূচিত হয়েছিল, যা আজও তরুণ প্রজন্মের অনুপ্রেরণার উৎস।
তিনি আরও বলেন “শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন প্রতিষ্ঠিত লোকজ ও কারুশিল্প জাদুঘর (লোক জাদুঘর) বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক জীবন্ত দলিল। এটি শুধু একটি জাদুঘর নয়, বরং আমাদের ইতিহাস ও লোকজ ঐতিহ্য সংরক্ষণের প্রতীক। এই প্রতিষ্ঠানকে আরও প্রসারিত করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরলে বাংলাদেশের শিল্প ও সংস্কৃতি বিশ্বমঞ্চে নতুনভাবে বিকশিত হবে।”
প্রধান অতিথি সোনারগাঁওয়ের ভবিষ্যৎ পর্যটন সম্ভাবনা নিয়েও আলোকপাত করেন। তিনি বলেন “এখানে রয়েছে ঐতিহ্যের ছোঁয়া, ইতিহাসের গন্ধ ও প্রকৃতির সৌন্দর্য। সঠিক পরিকল্পনা, রাস্তাঘাট প্রশস্তকরণ, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং ঐতিহ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে
সোনারগাঁওকে গড়ে তোলা সম্ভব আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন শহর হিসেবে।”
তিনি আরও যোগ করেন “বাংলাদেশের তরুণরাই পারে ঐতিহ্যের ভিত্তিতে আধুনিক, সৃজনশীল ও প্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে। তাদের উদ্যম, সততা ও দেশপ্রেমই হবে ভবিষ্যতের আলোকবর্তিকা।”
বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শক্তি তার তরুণ প্রজন্ম। তাদের চিন্তা, উদ্যম ও সৃজনশীলতা দিয়েই গড়ে উঠবে একটি ন্যায়ভিত্তিক, সমৃদ্ধ ও প্রযুক্তিনির্ভর বাংলাদেশ। তরুণদের দায়িত্ব শুধু স্বপ্ন দেখা নয়, বরং সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে এগিয়ে আসা।
সভাপতির বক্তব্যে মোঃ আতাউর রহমান বলেন, “তরুণ প্রজন্মের চিন্তা ও দায়িত্ববোধের মাধ্যমেই গড়ে উঠতে পারে আলোকিত বাংলাদেশ। ঐতিহ্যের মাটিতে দাঁড়িয়ে তারা যদি সততা, মানবতা ও উন্নয়নের দৃষ্টিতে কাজ করে, তাহলে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের জন্য একটি অনুকরণীয় উদাহরণ।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত তরুণরা দেশপ্রেম, ঐক্য ও দায়িত্ববোধের শপথ নিয়ে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
শেষে সাংস্কৃতিক পর্ব ও তরুণদের মুক্ত মতবিনিময়ে মুখর হয়ে ওঠে অনুষ্ঠানস্থল। প্রেরণা ও আশার আলো ছড়িয়ে দেয় রেনেসাঁ ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশনের এই মহৎ আয়োজন।